Friday, January 25, 2013

এক পাতার সংযোজন

গতকাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে । আর ভাল লাগে না পড়তে । কবে যে শেষ হবে এই পড়াশোনা ? নিজের বিবেকের কাছে নিজেই শুধাই ।

আমি জানি প্রতি দিনের মত আজও এই দিন চলে যাবে , চলে যাবে হয়ত কোন নতুন ছাপ ফেলে ।

সারাদিন নেই কোন কাজ , বিকেল বেলায় সেই মালদা কলেজের বইমেলা দেখা , আর তার সাথে নতুন কোন সুন্দরী মেয়ের খোঁজ । আজও কি সেই দিন আছে , সেই নতুন মেয়ের পিছন পিছন তার বাড়ী যাওয়া । তার স্কুল যাওয়ার সময় গোনার ।

আর ভাল লাগে না এসব কিছু , জীবনে শুধু শান্তি চাই । বিরহের কান্না তো অনেক হল , এবার না হয় ক্যারাম সিনেমার মত সত্যিকারের প্রেম বিজ্ঞান খেলা উচিত ।

সারাদিনের পরিশ্রমের পর আবার দুটো ছাত্রী পড়ানো । খাওয়া দাওয়া সেরে রাত্রে আবার সেই ফেসবুক ।

এইভাবেই কি আমার জীবন চলবে ? এই চলন্ত ট্রেনের কি কোন স্টেশন আসবে না ? কেউ কি আমায় নিজের মত করে আদর করবে না ? কেউ কি আমায় ফোন করে জিজ্ঞাসা করবে না “ কেমন আছ ” ?

থাক না ওসব কথা । ঘুমের ঘোরে আজও তোমার স্বপ্ন দেখি , আবছা আলোয় তুমি যেন কোথায় মিলিয়ে যাচ্ছ । হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গে । মা ফোন করেছে , কি রে বাড়ি কখন আসবি ? চোখ ডলতে ডলতে ভাবি এই তো একটু পরেই টিউশন পড়িয়েই , কিন্ত ভাবাটা মুখে প্রকাশ হল কই ? ফোনের চার্জ শেষ ।

মা , মাগো আমি আসছি । তুমি আমার পছন্দের খাবার তৈরি করে রেখ ।

তথৈবচ করে ফিরে আসি টিউশন ছেড়ে । দরজার কড়া নাড়ে , কে ? দাদা আপনার পার্সেল ছিল । যত্তসব ঝামেলা এখনই । কই দেন ?

আর দেরি করা যাবে না , বেড়িয়ে পড়ি ।

আমিতো রোজই বাসে বাড়ি ফিরি , কিন্ত আজও কি অন্যদিনের থেকে আলাদা ? কানে হেডফোনে গান চলছে “ চল ছাইয়া ছাইয়া ছাইয়া ” , এ যেন সেই শারুখ খানের সুটিং এর মত । কত শত স্বপ্ন এই রাস্তায় বিলীন হয়ে গেছে , কিন্ত কেইবা তার খবর রাখে ?

এমা আজও তো সেই দিন , মানে বৃহস্পতিবার , টুপুর টিউশনে যাবার দিন । আজও কি সে যাবে ? মনের মধ্যে শান্ত শীতল বাতাস বয়ে যায় । মনে পড়ে সেই বিগত তিন বছরের স্মৃতি ।

ঘুরে ফিরে সেই একই প্রশ্ন , সে কি আজও ভাল আছে ?

বাড়ীতে আসলে আমার মন টিকতে চায়না , শরীর এখানে থাকলেও মন পড়ে থাকে ওদের পাড়ার গলিতে । যদি ও বাড়ীতে থাকে ? আমি যদি ওকে দেখতে পাই ? ও দেখতে কেমনি বা হয়েছে ? ওর ছেলে মেয়েরাই বা কত বড় হয়েছে ?

আমি কি তাকে আজও ভালবাসি , নাকি এ আমার কল্পনা ?

    ঠান্ডাটা আজ একটু বেশিই মনে হয় । তবুও থেমে থাকি না , সেই পনের বছরের পুরনো হিরো সাইকেল , আমার সারাদিনের সাথী , আমার সঙ্গ দেয় । সমস্ত পেশী শক্তির জোরে পৌঁছে যাই গন্তব্যস্থলে । কিন্ত কই সেই হারান দিন ? কই সেই মিষ্টি মাখা হাসি মুখ ? সবই কি এই ঠান্ডায় জমে গেছে ?

তবুও আমি দমিবার নই , ওদের পাড়ায় ঢোকা বারণ , তাই বলে কি আমি অন্য কোথাও তো যেতে পারি । হায় ! এ পোড়া কপাল ।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান এক গতিশীল বিজ্ঞান , হ্যাঁ তাই তো , যাই না একবার সেই সমর দার কাছে ? ওর কাছেই তো টুপু পড়তে আসত । আমার হিরোর বয়স হয়েছে , আমার শরীরের মত ওর শক্তি নাই , জং পড়ে ওর সমস্ত কলকব্জা কমজোর হয়ে গেছে । মাঝে মাঝে আর্তনাদ করে ওঠে , যেন বলছে আমি আর পারছি না , আমার বেঁচে দে ওই শুভাষগঞ্জের ভাঙ্গাচোরার দোকানে ।

আমার শরীরে পরিশ্রমের ঘাম ঝরছে । এই তো সেই বাড়ী , আর ওই তো বেগুনী রঙের সাইকেল । আজও হয়ত টুপু পড়তে এসেছে ?

সাইকেলের বেল পুরনো হলেও আওয়াজ একদম নতুন , এই তো গতবার এসে তেল দিয়েছিলাম । ক্লিং ক্লিং আওয়াজ , আর ঝোড়ো গতি , যদি একটি বার ঘরের জানলা সরিয়ে ও দেখে । রাস্তার মোড়ে আধঘণ্টা কাটিয়ে , দূর থেকে দেখতে পাছি ওই বেগুনী সাইকেল নিয়ে টুপুর মত কেউ এগিয়ে আসছে ? আমার চুল ঠিকঠাক করি , আর একটু আগে গিয়ে দাঁড়াই । ছিঃ ! এখানে তো আলো নেই কি করে ও আমায় কি করে দেখবে ? আর একটু আগে এগিয়ে দাড়াই ।

 

কিন্ত একি , এতো সেই টুপু নয় । এতক্ষণে আমার ভুল ভাঙ্গে , আমি এতক্ষণ যা ভাবছিলাম সবই আমার ভাবনা , আসলে এগুলি আমার কল্পনা । সে যে আজ অন্য কারও হয়ে গেছে , সে এখানেই বাঃ আসবে কি করে ?

আজও তোমায় ভালবাসি...........................


অনেক দিন হল তোমায় দেখিনা , মোবাইলে চার্জ হওয়ার মত আমি নিজেকে চার্জ করতে পারি না । তুমি ভাবছ আমি পাগলের মত ভুল ভাল কি বকছি ? হ্যাঁ আমি পাগল , তোমার জন্য পাগল , সারা জীবন পাগল । আজকের দিনটা কি তোমার মনে পড়ে ? এই দিনটিতে আমি তোমায় বছরের প্রথম গ্রিটিংস কার্ড দিয়েছিলাম । হয়ত তুমি ভুলে গেছ , কিন্ত আজও আমার মনে পড়ে সেই দিনের কথা ।
তুমি ভাবছ এত কিছুর পরেও আমি কি করে এই কাজের পুনরাবৃত্তির সাহস পাই ? দেখ আমি অনেক ভেবেছি , কিন্ত তোমায় ভুলতে পারি না । ভাবি অন্য কারো সাথে সময় কাটিয়ে তোমায় ভুলে যাব , কিন্ত অনেক চেষ্টা করেও আমি ভুলতে পারি না সেই দিন গুলি , প্রতি মুহুর্ত মনে হয় তুমি আমার হৃদয় জুড়ে আছ । থাক না আজ সেই পুরনো কথা ।
তোমার ভয়েস রেকর্ডিং আজও ঘোমানোর সময় শুনি । সারাদিন সময় না থাকার জন্য রাতের অর্ধেক সময় তোমাকে নিয়ে ভাবিজানি ভালবাসা মানে শুধু পাওয়া নয় , সে যাতে সুখি থাকে সেটাই ভালবাসা । হয়ত এই কথাগুলি তোমার বাড়ীর লোক শুনে বলবে “ এ মা এর দেখি লজ্জা নেই ’’ ।
তা যাই হোক , মাসি , গুদু , ১০ গ্রাম , ৫ গ্রাম এরা সবাই কেমন আছে ? আমি তো অবাক হয়ে গেছিলাম , যে দিন ১০ গ্রাম এর মুখে প্রথম মা ডাক শুনি সত্যি ভাবতে অবাক লাগে , কি করে তিনটা বছর কেটে গেল ?
আমি আর ভাবি না কাকে নিয়ে সংসার করব ? কার সাথে আমার বিয়ে হবে ? কিন্ত আমি মন থেকে কামনা করি যার সাথে তুমি যাবে তার সাথে অবশ্যই সুখে থাকবে । ভেবেছিলাম অনেক কিছু , তোমায় পাই নি তো তোমাকে কারও হতে দেবনা । আজ আমি ভাবছি , এই রাস্তায় আমি প্রথম নই , অনেকে এই রাস্তা পার হয়েছে ।
আমার এই লেখা দেখে এক প্রফেসার বলেছিলেন “ তোমায় এই ভাষা পুঁথিগত ভাবে সজ্জিত রাখ , একদিন এর আকাশ ছোঁয়া মুল্য পাবে ” । আমি জানি আমার ভাষা কোথা থেকে এসেছে , একমাত্র যে আঘাত পায় সেই পারে এরকম ভাষা খুঁজতে ।
এই কয়দিনে আমি অনেক কিছু শিখেছি , শিখেছি ভালবাসা শুধু বন্দী থাকে না একে উজাগর করে দিলে , মনের মাঝে আসে এক অসামান্য তৃপ্তি ।
আমি কিন্ত তোমার ছবি আঁকা একটি টিসার্ট পরি । আমার ফেবারিট । তোমার আপডেট খবর অনেকদিন পাই না । জানতে খুব ইচ্ছা করে , তুমি কেমন আছ ? তোমার পরিবারের লোক কেমন আছে ? সেই ৫ , ১০  , ৫০ , ১০০ গ্রাম সবাই কেমন আছে ? কেমন আছে তোমার ঠাম্মা , দাদু ? এইতো কদিন আগে রেশন তুলতে গিয়ে দেখি তোমার ঠাম্মা ।

ভাল লাগে তোমাদের গ্রাম , ভাল লাগে তোমার স্কুল , ভাল লাগে তোমাদের হাট । কিন্ত ভাল লাগাটাই অবাস্তব ।

ফিলিংস কাকে বলে ?
 দূর্গা পূজার দশমির দিন , আমি আর আমার দুই বন্ধু মিলে গাজল যাচ্ছিলাম । আমি খুব একটা ভাল বাইক চালাই না , তাই আমার বন্ধুকে দিলাম । সবাই আনন্দ করতে করতে যাচ্ছি । ফাঁকা রাস্তা , জনমানব শূন্য , ইটাহার পার হয়ে , পতিরাম । আবার পতিরাম পার হয়ে হরিরামপুর , এটা একটা মুসলিম এলাকা যার মধ্য দিয়ে ২২ বছর বয়সী তিন যুবক যাচ্ছে । স্পীড ৫৫ কি ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টা । আমার হাতে হেলমেট রয়েছে , আমি ভাবি হাতে না রেখে মাথায় পরা উচিতহেলমেট পরার ২ মিনিট পরে ঘটে বীভৎস ঘটনা ।
আমরা ২১ মাইলের কাছাকাছি একটি মোড়ে ৪৫ ডিগ্রী কোণে , গাড়ীর স্পীড ৭০ কিমি । আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি , সামনে একটা টার্নিং । দেখতে দেখতেই আমার মাথায় কি যেন একটা আঘাত লাগল । মনে হল কে যেন আমার মাথায় প্রচণ্ড জোরে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেছেআমার বাইক দূরে পড়ে আছে , সবাই ছিটকে আছে । আমি যেন দেখতে পাচ্ছি তুমি সর্ষা খেতের মধ্যে থেকে ডাকছ , “ কি গো বাড়ী যাবে না ” । মাথায় হেলমেট পরাছিল তবুও মাথা ফেটে গেছিল , আমি ১০ মিনিট চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম না । শুধু এটুকু বুঝতে পারছি কে যেন কাঁদছে ?
হয়ত আজও বেঁচে গেলাম তোমার বিরহে কাঁদব বলে ।
আমি ভালই বুঝলাম যে হয়ত তোমার প্রতি আমার নিষ্পাপ ভালবাসার জন্য । তুমি ভাবছ আমি হয়ত কোন বানান গল্প বলছি , কিন্ত না , তোমার যদি বিশ্বাস না হয় তবে হরিরাম পুরের ডিলার আঙ্গুর এর কাছে শুনে দেখতে পার ।

এখনও তোমার জন্মদিন আমি পালন করি , ভাবি আমার জন্য নয় হয়ত ন্য কারও জন্য আমার পড়াশোনা শেষ হলে গল্প লেখব , আমি তোমায় বলেছিলাম না যে ‘ আমার হাতে আর সময় থাকবে না ’ , সত্যি আমার হাতে সময় খুব কম । আমায় অনেক কাজ করতে হবে , এখন আমি তোমার দেখা পেতে চাই , কিন্ত তারও সময় নেই । সে যাই হোক আমার প্রকাশিত প্রথম বই অবশ্যই তোমায় দেব ।
আমার ল্যাপটপের পাসয়ার্ড তোমার নামে , মোবাইলের ওয়ালপেপারে তোমার ছবি , আমার ঘরের সর্বত্র তোমার ছবি । শুধু ভাবি তোমায় , গান শুনে মনে পড়ে পুরানো কথা । আমি কোনও দিন ঠাকুর বা ভগবান বলে কিছু বিশ্বাস করতাম না , কিন্ত আজও বোল্লা তে তোমার নামে প্রতিবার পূজা দিয়ে আসি । হয়ত তোমার জন্যই এই পরিবর্তন হয়েছে আমার । আমার সমস্ত বন্ধুদের আমাদের গল্প শুনাই , ওরা তোমায় দেখতে চায় । দেখতে চায় সেই মেয়েকে । যার মুখের হাসিতে আমার সকালের ঘুম ভাঙ্গে , যার তাকানোতে আমার সারাদিন চলে । সবই আমার ভাবনা ছাড়া আর কিছু নয় ।
তুমি জানো আমার পক্ষে তোমার নাম্বার জোগাড় করা কোন ব্যাপার নয় , কিন্ত আর ভাল লাগে না আর সে রকম করার । তাই আর ওসব চিন্তা করি না , শুধু ভাবি তুমি কি করে ভাল থাকবে ?
       হয়ত তোমার পরিবারের লোক ভাবতেই পারে আর ছেড়ে কথা বলা যাবে না , তাই নিজের নাম প্রকাশ করলাম না । আমি জানি তুমি বুঝবে কে লেখেছে ? প্লীজ কোন কিছু কোরও না ।

তোমার ফোনের মিসড কল আসবে বলে আজও নাম্বার চেঞ্জ করিনি ।


ভাল থেক , শুখে থেক ।
আজও আছি তোমার অপেক্ষায়